IQNA

যেভাবে তৈরি হয়েছিল অস্ট্রেলিয়ার প্রাচীন মসজিদ

0:01 - January 28, 2023
সংবাদ: 3473239
তেহরান (ইকনা): অস্ট্রেলিয়ায় মুসলিমদের যাতায়াত ষষ্ঠদশ শতাব্দী থেকে হলেও বিংশ শতাব্দী থেকে মুসলিমদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে শুরু হয়েছে।
প্রথম দিকে এখানে ইন্দোনেশিয়ার দ্বীপপুঞ্জ থেকে ম্যাকাসান সম্প্রদায়ের মুসলিম দর্শনার্থীরা এখানে এসেছিলেন। ১৮৬০ সালের দিকে অস্ট্রেলিয়ার মরুভূমিতে কাজের জন্য আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য, ভারত উপমহাদেশ বিশেষত আফগানিস্তানের অনেক উটচালকের আগমন ঘটে। তাদের মধ্যে অনেক ধার্মিক মুসলিমও ছিল। ১৯৫৪ সালের পর থেকে ব্যাপকভাবে মুসলিমদের অভিবাসন শুরু হয়। মূলত আধুনিক অস্ট্রেলিয়া গঠনে তাদের ব্যাপক ভূমিকা আছে।
 
সরকারি পরিসংখ্যান মতে, বর্তমানে মুসলিমদের সংখ্যা আট লাখ ১৩ হাজার ৩৯২ জন, যা মোট জনসংখ্যার ৩.২০ ভাগ। খ্রিস্টধর্মের পর ইসলামই দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্ম হিসেবে মনে করা হয়। অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন ও সিডনিতে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক মুসলিমের বসবাস রয়েছে। বর্তমানে দেশটিতে সাড়ে তিন শর বেশি মসজিদ রয়েছে। এর মধ্যে দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার মারি মসজিদকে সবচেয়ে পুরনো বা প্রথম মসজিদ হিসেবে মনে করা হয়।
 
আফগানদের তৈরি প্রথম মসজিদ : অ্যাডিলেড শহর থেকে ছয় শ কিলোমিটার দূরে মারি অঞ্চলে বসবাসরত তৎকালীন আফগান সম্প্রদায় মারি মসজিদটি নির্মাণ করে। ১৮৮২ সালের দিকে কাঠের কাঠামোতে মাটি, শুকনো ঘাস ও পাতার ছাউনি দিয়ে তৈরি হয় ছোট এই মসজিদ। স্থানীয় উট চালক ও ওয়াঙ্গামান্না স্টেশনের মালিক আবদুল কাদিরের তত্ত্বাবধানে তৈরি হওয়া মসজিদের প্রথম ইমাম ছিলেন মোল্লা আসিম খান, যিনি নিজেও উট চরাতেন। ১৯৫৬ সাল থেকে প্রায় অর্ধশতাব্দীকাল মসজিদটি পরিত্যক্ত থাকে। ২০০৩ সালে মসজিদ প্রতিষ্ঠাকারীর বংশধররা পুরনো কাঠামো বজায় রেখে মূল মসজিদের মতো আরেকটি মসজিদ তৈরি করে। অস্ট্রেলিয়ার প্রাচীন ও ঐতিহাসিক এই মসজিদ দেখতে আসেন অনেকে। পর্যটক ও স্থানীয়রা এখানে নিয়মিত নামাজ পড়ছেন।
 
প্রাচীন মসজিদ নির্মাণ : অস্ট্রেলিয়ার খনিজসমৃদ্ধ শহর ব্রোকেন হিলে অবস্থিত মসজিদ মিউজিয়াম। স্থানটি ইসলামের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ হলেও সর্বসাধারণের কাছে তা অজ্ঞাত। ১৮৮৭ সালে আফগান উট চালকদের তৈরি করা মসজিদটি অস্ট্রেলিয়ার প্রাচীন মসজিদগুলোর অন্যতম। বর্তমানে মসজিদটি দেখাশোনা করেন ৮১ বছর বয়সী আমিনুল্লাহ ববি শামরোজ। এই অঞ্চলের উট চালকদের বংশধর সম্পর্কে বর্তমানে তিনি সবচেয়ে অবহিত রয়েছেন। তাঁর বাবা শামরোজ খান ও দাদা জায়দুল্লাহ ফয়জুল্লাহ এই মসজিদেই নামাজ পড়েছেন। মোটকথা ধারাবাহিক তিন প্রজন্ম একই মসজিদের সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছেন। দীর্ঘ তিন দশক ধরে উট চালকদের গবেষণা থাকায় ববি শামরোজ এখন সর্বত্র পরিচিত মুখ। তাঁর মাধ্যমেই অস্ট্রেলিয়ার ইসলামের ইতিহাসের নানা দিক উন্মোচিত হয়। দেশটিতে আসা উট চালকদের অধিকাংশ সুন্নি মুসলিমের তৈরি মসজিদগুলোর তথ্য তুলে ধরেন তিনি।
 
সূত্র : মিডলইস্ট আই ও এবিসি নিউজ
captcha