জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ, শহীদ মিনারের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে দিনের কর্মসূচি শুরু হয়। এরপর দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ এবং ভাষাশহীদদের জন্য বিশেষ মুনাজাত পরিচালনা করা হয়।
দ্বিতীয় পর্বে ভিডিও কনফারেন্সিং টুল স্কাইরুমের মাধ্যমে ইরানি কবি এবং দেশ-বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি কবি-সাহিত্যিকদের সমন্বয়ে স্ব স্ব মাতৃভাষায় কবিতা পাঠ ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
উক্ত অনুষ্ঠানে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি জনাব ইয়েকদেলে (ডাইরেক্টর জেনারেল মি. রাসুল মুসাভি-এর পক্ষে), ইউনেস্কোর তেহরানস্থ প্রতিনিধি মিজ্ টিভা কামরান (প্রোগ্রাম অফিসার ফর কমিউনিকেশন এ্যা- ইনফরমেশন) ও মিজ্ মিত্রা গাফ্ফারিয়ান আস্লে (প্রোগ্রাম এ্যাসিসটেন্ট ফর এডুকেশন), ইরানি কবি ড. লেইলা র্কোদ্বাচেহ, ইরানি অভিনেত্রী মিজ্ মাসিহ মীর হোসেইনি, বাংলাদেশের ‘ভ্রমণ’ ম্যাগাজিনের সম্পাদক জনাব আবু সুফিয়ান, রেডিও তেহরানের বাংলা বিভাগের পরিচালক মুজতাবা ইব্রাহিমি, সাংবাদিক নাসির মাহমুদ, মুহাম্মদ আশরাফুর রহমান, মোহাম্মদ মুজাহিদুল ইসলাম, গাজী আব্দুর রশিদ, আবুসাঈদসহ বাংলাদেশ কমিউনিটির সদস্যবৃন্দ এবং ইরানে বসবাসকারী শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন। এছাড়াও, বাংলাদেশ দূতাবাসের কমার্শিয়াল কাউন্সেলর ড. জুলিয়া মঈনসহ সকল কর্মকর্তা-কর্মচারি উক্ত অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
সভাপতির বক্তব্যে তেহরানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এ এফ এম গওসোল আযম সরকার গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদান এবং শহীদদের আত্মদান গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর প্রেক্ষাপটে এ বছরের একুশে আরও অনেক বেশি তাৎপর্যপূর্ণ। তিনি ২১ ফেব্রুয়ারিকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে ঘোষণায় এবং ঢাকায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠায় প্রবাসী বাংলাদেশি এবং বিশেষত মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবদানের কথাও গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। সেইসাথে বিশ্বের সকল ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ভাষা ও স্বতন্ত্র সংস্কৃতিকে বিলুপ্তির হাত হতে রক্ষা করা, সেগুলো যথাযথ সংরক্ষণ এবং চর্চা করার বিষয়ে সচেষ্ট হওয়ার জন্য সকলকে আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে রেডিও তেহরানের বাংলা বিভাগের পরিচালক মুজতাবা ইব্রাহিমি বলেন, “পৃথিবীর ইতিহাসে সম্ভবত বাংলাদেশই একমাত্র দেশ যে দেশটি নিজেদের মাতৃভাষায় কথা বলার জন্মগত অধিকার আদায়ের জন্য রক্ত দিয়েছে। শহীদের রক্ত কখনও বৃথা যায় না। তার প্রমাণ সেই বাংলা ভাষা এখন আন্তর্জাতিক মর্যাদায় অভিষিক্ত হয়েছে।”
অনুষ্ঠানমালার বিভিন্ন পর্যায়ে ভাষা আন্দোলন ও ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানের ওপর তথ্যচিত্রও প্রদর্শন করা হয়।
পার্সটুডে